![]() |
মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের পরিচিতি |
সারা বিশ্বে বহুল আলোচিত ও ব্যবহৃত একটি এপ্লিকেশন হচ্ছে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, যা MS Word নামেও পরিচিত। তো চলুন আজকে আমরা জেনে নিই - "মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কি?" "মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস" এবং "মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের কাজ কি কি"
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড (Microsoft Word) কাকে বলে?
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড (Microsoft Word) হল একটি ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার (Word Processing Software)। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে Compose Type, Drawing, Project Profile তৈরি করা, ছোটখাট ডিজাইন করা, বই তৈরি করা, দলিল, প্রশ্ন, চিঠিপত্র টাইপ করা ছাড়াও প্রিন্ট দেওয়া ও অফিসিয়াল কাজ সম্পাদন সহ যাবতীয় কাজ করা যায়। অত্যন্ত সহজ এই প্রোগ্রামটি সারা বিশ্বে প্রচলিত আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের Microsoft Corporation কতৃক এই সফটওয়্যার তৈরী তাই একে (Microsoft Word) বা (MS Word) বলে নামকরণ করা হয়েছে।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস?
মাইক্রোসফট মাল্টি-টুল ওয়ার্ড এর ঘোষণা দেয় জেনিক্স এবং এমএস-ডস ১৯৮৩ সালে। শীঘ্রই এর নাম পরিবর্তন করে করা হয় মাইক্রোসফট ওয়ার্ড। একই বছরে মাইক্রোসফট উইন্ডোজের জন্য ওয়ার্ড চালু করে।মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ড ওয়ার্ড 1.0 এর প্রথম সংস্করণটি ১৯৮৩ সালের অক্টোবরে চালু হয়েছিল এবং প্রাক্তন জেরক্স প্রোগ্রামারস চার্লস সিমোনি এবং রিচার্ড ব্রোডি দ্বারা বিকাশ করা হয়েছিল।
দু জনকে ১৯৮১ সালে মাইক্রোসফ্টের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং পল অ্যালেন ভাড়া করেছিলেন। এই সময়ে ওয়ার্ডকে মাল্টি টুল ওয়ার্ড বলা হত। এটি ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম চালিত কম্পিউটারগুলিতে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
শব্দটি ছিল একটি WYSIWYG (আপনি যা দেখেন আপনি তাই পাবেন) প্রোগ্রাম। এর অর্থ হল স্ক্রিনে থাকা কোনও দস্তাবেজটি কীভাবে এটি একবার মুদ্রিত হবে। শব্দ ব্যবহারকারীদের পাঠ্য নথি তৈরি করতে, সংরক্ষণ করতে এবং মুদ্রণ করতে দেয়।
তবে এটি তাত্ক্ষণিক সাফল্য নয় সম্ভবত এটি বিশাল জনপ্রিয় ওয়ার্ড পার্ফেক্ট এবং ওয়ার্ডস্টার ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রামগুলির সাথে প্রতিযোগিতা করছিল। বানান চেক এবং শব্দ গণনা সহ যুক্ত বৈশিষ্ট্য সহ ১৯৮৫ সালে সংস্করণ 2.0 প্রকাশিত হয়েছিল।
পরের বছরগুলিতে, মাইক্রোসফট প্রোগ্রামটি বেশ কয়েকবার পুনরায় কোড করেছে যাতে এটি ডস (ডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম) এবং ম্যাকিনটোস সহ বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমে কাজ করতে পারে। নামটিও সংক্ষিপ্ত এবং আরও স্মরণীয় করতে ওয়ার্ড করে দেওয়া হয়েছিল।
১৯৯৩ সালে মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ড 6.0 প্রকাশ করেছিল যা ম্যাকিনটোস, উইন্ডোজ এবং ডসগুলিতে কাজ করে। ওয়ার্ড 6.0 হল ডসটিতে চালানোর জন্য তৈরি করা সর্বশেষ সংস্করণ এবং সংস্করণ নম্বর দ্বারা চিহ্নিত করা সর্বশেষ সংস্করণ; পরবর্তী সংস্করণগুলি তাদের মুক্তির বছরের পরে নামকরণ করা হয়েছিল।
তার পর থেকে মাইক্রোসফ্ট কমপক্ষে প্রতি দুই বছর অন্তর ওয়ার্ডের একটি নতুন সংস্করণ প্রকাশ করেছে। অফিসের 365 অংশের সাথে ওয়ার্ড 2019 সহ সর্বাধিক সাম্প্রতিক প্রকাশটি ২০১৮ এর শেষে ছিল। মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ডের ভবিষ্যত আজ, ওয়ার্ড এবং পুরো অফিস স্যুটটি অত্যন্ত সংহত হয়েছে এবং ওএস এক্স, অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস, পাশাপাশি উইন্ডোতে চলছে।
মাইক্রোসফ্টের সিইও সত্য নাদেলা বলেছেন যে অফিস হল সংস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এপিআই (অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস)। সফ্টওয়্যারটির সর্বশেষতম সংস্করণটি ওয়ার্ড 2019 its এর স্প্রেডশিট সমকক্ষের মতো, এক্সেল, ওয়ার্ডকে তার কার্যকারিতাটি উন্নত করতে এবং পরিবর্তিত কম্পিউটিং সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে রাখার জন্য একাধিক হালনাগাদ দেওয়া হয়েছে।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের প্রাথমিক ধারণা
স্টার্ট মেনু থেকে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ফাইল ওপেন করলে ডিফল্টভাবে একটা সাদা পেজ সামনে আসবে।এ পেইজে একটি দাগ জ্বলছে, নিভছে। একে কার্সর বলে। এ কার্সর যেখানে থাকে কিবোর্ড দিয়ে কোন অক্ষর লিখতে চাইলে সেখান থেকে শুরু হয়।
আরো পড়ুনঃ মাইক্রোসফট এক্সেল কাকে বলে?
MS Word এ লেখার সময় কার্সর ডান দিকে যাবে। লিখতে লিখতে লাইন ফিলাপ হয়ে গেলে অটোমেটিকভাবে নিচের লাইনে চলে যাবে। আর এভাবে লেখাকে প্যারা করে লেখা বলে। কিন্তু আপনার যদি একটু লিখেই পরের লাইনে যাওয়ার প্রয়োজন হয় তবে কি বোর্ডের Enter এ চাপ দিতে হবে।
-লেখার মাঝে টাইপ করাঃ-
লেখার মাঝে টাইপ করতে হলে আপনি যেখানে লিখতে চান সেখানে প্রথমে কার্সর নিতে হবে। কার্সর নেওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। এটা কিবোর্ড বা মাউস দিয়ে নেওয়া যায়। আপনি যেখানে কার্সর নিতে চান মাউস দিয়ে সেখানে নিয়ে লেফট ক্লিক করলেই কার্সর সেখানে চলে যাবে। আর কিবোর্ড দিয়ে কার্সর নিতে চাইলে কিবোর্ডের অ্যারো কি ব্যবহার করতে হবে। তাছাড়া নিচের শর্টকাট পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করেও কার্সর এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়া যায়।
-কার্সর নেওয়ার জায়গা Command.
-এক অক্ষর বামে সরানো Left Arrow.
-এক অক্ষর ডানে সরানো .Right Arrow
-এক লাইন উপরে যেতে Up Arrow.
-এক লাইন নিচে যেতে Down Arrow.
-এক শব্দ বামে নিতে Ctrl + Left Arrow.
-এক শব্দ ডানে নিতে Ctrl + Right Arrow.
-লাইনের শুরুতে Home Key.
-লাইনের শেষে End Key.
-বর্তমান প্যারার শুরুতে Ctrl + Up Arrow.
-বর্তমান প্যারার শেষে Ctrl+ Down Arrow.
-এক স্ক্রিন উপরে Page Up Key.
-এক স্ক্রিন নিচে Page Down Key.
স-্ক্রিনের শুরুতে Ctrl+ Page Down.
-স্ক্রিনের শেষে Ctrl+ Page Up.
-ডকুমেন্টের শুরুতে Ctrl + Home.
-ডকুমেন্টের শেষে Ctrl + End.
-লেখা মুছা বা ডিলিট করা ( Delete text ).
MS Word এর কোন ডকুমেন্টে ভুল হলে বা ডিলিট করার প্রয়োজন হলে তার তিনটি পদ্ধতিতে ডিলিট করা যায় এগুলো হলো-
Backspace Key
Delete Key
Insert Key
Backspace Key: লেখার শেষটুকু ডিলেট করতে অর্থাৎ কার্সরের বামদিক থেকে লিখা মুছার জন্য এ কি ব্যবহার করা হয়। আবার আপনি যতটুকু লিখা ডিলিট করতে চান তা সিলেক্ট করে Backspace Key চাপলেই লিখা ডিলিট হবে।
Delete Key: ডিলিট কি চাপলে কার্সরের ডানদিক থেকে লিখা মুছবে।
Insert Key: এ কি চাপলেই ওভারমোড চালু হয়। এ সময় ডকুমেন্টে কোন লিখা লিখলে কার্সরের স্থানে লিখা হয়।আর এর ডানে কোন লেখা থাকলে ডিলিট হয়ে যাবে। যেকোন ফরম পূরণ করার সময় কোন লেখা ডিলিট করে নতুন লেখা টাইপ করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এ মোড চালুু থাকলে ডকুমেন্টের স্ট্যাটাস বারের OVR অংশটি উজ্জ্বল হয়ে যায়।
ডিলিট করা বা হারানো অংশ ফিরিয়ে আনা ( Undo Deleted )
ভুলবশত লিখার কোন অংশ যদি হারিয়ে যায় বা ডিলিট হয়ে যায় বা কেটে যায় তাহলে তা ফেরত আনতে কিবোর্ডের শর্টকাট কি হচ্ছে Ctrl+Z বা Edit > Undo তে ক্লিক করতে হবে। তাহলেই আগের অংশ ফেরত পাওয়া যাবে।
লিখা সিলেক্ট করা বা কালার করা (Select or color the text)
মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে কোন লেখাকে কালার করতে হলে যে অংশ কালার করতে চান প্রথমে সে অংশ সিলেক্ট করে তারপর কালার করতে হবে। মাউস এবং কিবোর্ড দুটো দিয়েই সিলেক্ট করা যায়।
কিবোর্ড দিয়ে সিলেক্ট করতে Shift কি চেপে ধরে Arrow Key চাপ দিতে থাকলে তা সিলেক্ট হতে থাকবে। আপনি যদি ডকুমেন্টের পুরো লিখা সিলেক্ট করতে চান তাহলে Ctrl + Aতে চাপতে হবে। আবার সিলেক্ট করা লিখা বাতিল করতে মাউস দিয়ে ডকুমেন্টের যেকোনো জায়গায় ক্লিক করলেই হবে বা কিবোর্ডের Arrow Key চাপ দিলেই হবে।
💡মাইক্রোসফট ওয়ার্ড (Microsoft Word) এর কাজ কি?
👉MS Word এর কাজ সমূহ :-
✔যে কোন ধরণের Document বা Text লেখা
✔বিভিন্ন চিঠিপত্র, দলিল, প্রশ্নপত্র টাইপ ও প্রিন্ট করা
✔ডিজাইন করা
✔বিভিন্ন ধরণের Project Profile তৈরী করা
✔বিভিন্ন ধরণের Drawing, টেবিল এবং ডায়াগ্রাম তৈরী করা
✔বিভিন্ন ধরণের কম্পোজ ও টাইপ করা
✔ব্যাক্তিগত নোট তৈরী করা সহ আরো অনেক ধরণের কাজ সম্পাদন করা হয়।
প্রথমে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ফাইলটি ওপেন করলে Defult একটি সাদা Page সামনে আসবে। আর এই সাদা পেইজে একটি দাগ নিভু নিভু করছে, এই দাগ কে কার্সর বলে। এই কার্সর যেখানে থাকবে কি-বোর্ড দিয়ে কোন অক্ষর চাপ দিলে লেখাটা সেখান থেকে শুরু হবে।
লেখার সময় কার্সর ডানদিকে যাবে। এভাবে লেখতে লেখতে লাইন ফিলআপ হলে কার্সর সয়ংক্রিয়ভাবে নিচের লাইনে যাবে। আর যদি লাইন ফিলআপ না হলে যদি নিচে যাওয়ার প্রয়োজন হয় তবে কি-বোর্ড এর Enter কী চাপ দিতে হবে।
💡Articles Write or Delete করা:
Documents এ লেখা ভুল হলে বা ডিলিট করার প্রয়োজন হলে তা সাধারণত ৩ টি পদ্ধতিতে করা যায়। যেমন:
১. যদি লেখার শেষ অংশটুকু Delete করতে হয় তবে কী-বোর্ড এর Backspace Key চাপলেই বামদিক থেকে অক্ষর মুছা শুরু হবে। আবার য়তটুকু লেখা Delete করার প্রয়োজন হবে তা সিলেক্ট করে নিয়ে Backspace Key চাপলেই লেখা ডিলিট হবে।
২. কী-বোর্ড এর Delete Key দিয়েও একি ভাবে ডিলিট করা যায়, তবে একটা করে ডিলিট করলে ডানদিক থেকে অক্ষর মুছে যাবে।
৩. কী-বোর্ড থেকে Insert Key চাপলেই ওভাররাইট মুড চালু হয়। ওভাররাইট মুড চালু হলে ডকুমেন্ট-এ কোন লেখা লিখলে কার্সরের স্থানে লেখা হবে এবং তার ডানে লেখা থাকলে তা মুছে যাবে।
সাধারণত কোন ফরম পূরণ করার সময় কোন লেখা মুছে দিয়ে নতুন লেখা টাইপ করার জন্য এটি ব্যবহার হয়। এই মুড চালু থাকলে ডকুমেন্টের স্ট্যাটাস বারের OVR অংশটি উজ্জল হয়ে যায়।
0 Reviews
Your rating